রবিবার, ১৪ অগাস্ট ২০২২, ০৪:২৬ পূর্বাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার:বাঘারপাড়া উপজেলার গৃহবধু জিনিয়া ইয়াসমিন তুলি হত্যার ঘটনায় বিমান বাহিনীর কর্পোরাল পদে কর্মরত স্বামীকে মুল পরিকল্পনাকারী হিসেবে আদালতে চার্জশিট জমা দিয়েছে পুলিশ। জুলফিকারের দ্বিতীয় বিয়েকে কেন্দ্র করে তুলিকে খুন করা হয় বলে চার্জশীটে উলে¬খ করা হয়েছে। চার্জশীটে অভিযুক্ত হলো, তুলির দেবর বাঘারপাড়া পান্তাপাড়া গ্রামের মৃত. মোশারফের ছেলে যশোর বিমান বাহিনী কর্পোরাল প্রভোস্ট মোহাম্মদ শাহবুদ্দিন (বিডি-৪৭০৭১৯) , তুলির স্বামী বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ঘাঁটি কুর্মিটোলার কর্পোরাল প্রোভোস্ট জুলফিকার আলী (বিডি-৪৭০০৩১) ও শাশুড়ী ফরিদা বেগম। চার্জশিটে শাহাবুদ্দিনকে আটক ও অপর দুই আসামিকে পলাতক দেখানো হয়েছে।
গত ১৩ এপ্রিল স্বামী জুলফিকার তুলির সাথে একঘরে মোবাইলে কথা বলতে থাকে। এমন সময় মা ফরিদা দরজা আটকে দেয়। অন্য ঘরে শাহবুদ্দিন তুলিকে ছুরি দিয়ে এলোপাতাড়ি ভাবে কুপিয়ে জখম করে। তুলিকে প্রথমে যশোর সদর হাসপাতালে পরে সিএইচএমএস হাসপাতালে ভর্তি করা হলে ১৪ এপ্রিল মারা যায়। এঘটনায় নিহত তুলির পিতা ঝিকরগাছা উপজেলার মোবারকপুর গ্রামের শহিদুল মামলা করেন। কিন্তু ওই মামলার এজাহারে অজ্ঞাত কারণে স্বামীর নাম বাদ দেয়া হয়। পুলিশ ঘাতক শাহবুদ্দিনকে আটক করে আদালতে সোপর্দ করে। এদিকে মূল পরিকল্পনাকারী জুলফিকারের নাম এজাহারে না আনার বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধন করে তুলির পরিবার। এ মানব বন্ধনে যশোরের বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন অংশগ্রহণ করে। চাকরিচ্যুতসহ জুলফিকারের ফাঁসির দাবি জানানো হয়। বাঘারপাড়া থানার এস আই রফিকুল ইসলাম মামলাটি তদন্ত করে জুলফিকারের সম্পৃক্ততা প্রমাণ পান। একই সাথে চার্জশিটে তিনজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমাদেন।
এ বিষয়ে তুলির পিতা শহিদুল জানান, তিনি পেশায় একজন ভ্যান চালক। মেয়েকে বিয়ের পর থেকেই যৌতুক দাবি করতে থাকে জুলফিকার। যৌতুকের দাবিতে প্রতিনিয়ত মারধর করতে থাকে । একপর্যায় সরকারি চাকরি দোহায় দিয়ে জমি বিক্রি করে টাকা নেন জুলফিকার। জুলফিকার ঢাকাতে চাকরিতে যোগদান করে তার মেয়েকে নিয়ে যায়। তাদের সংসারে দু’সন্তান আসে। এরমধ্যে গোপনে যশোর সদর উপজেলার হাসিমপুর গ্রামের আখি আফরিন প্রিয়া নামের এক মেয়েকে বিয়ে করে। ওই বিয়ের পর আবার শুরু হয় জুলফিকারের অত্যাচার। একপর্যায়ে তুলিদের যশোরে পাঠিয়ে ওই মেয়েকে ঢাকায় নিয়ে বসবাস করতে থাকে। এসব জানাজানি হলে জুলফিকারের নির্দেশে ভাই ও মা ফরিদার সহযোগিতায় শাহবুদ্দিন তুলিকে খুন করে।
তিনি আরো জানান, তুলির দুই বছরের শিশু আলিফ ও এক বছরের শিশু হামজা এখনো ওর মাকে খুঁজে যাচ্ছে। মায়ের কবরের কাছে যেয়ে দুধ খেতে চাচ্ছে। এ ব্যথা সহ্য করার নয়। তিনি তার মেয়েকে হত্যার দায়ে তিন আসামির ফাঁসি দাবি করেন।
Leave a Reply