বুধবার, ২১ এপ্রিল ২০২১, ০৭:০৯ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার: ৬৫টা বসন্ত পেরিয়ে আজ জীবন জিবিকার জন্য মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরছে রণবীর দেবনাথ। ৬৫ বছরের এই বৃদ্ধ চোখেও দেখতে পান না ১১ বছর । তার ভালবাসার মানুষ প্রতিমা বিভারানী নাথ। তার বয়সও ৬০। তিনি নিজেও চলতে পারেন না বয়সের ভারে। নুইয়ে পড়েছেন তারপরও অসুস্থ্য স্বামীর দেখভাল করা ও খাবারের সন্ধানে মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হচ্ছে।এই অসহায় পরিবারটি উপায়হীন হয়ে থাকেন যশোরের শেখহাটী শশ্বানের পাশে একটি খুপড়ি ঘরে। ঘরটি বসবাসের অযোগ্য বৃষ্টি হলেই ঘরে পানি পড়ে। তারপরও ওই ঘরে
তাদের দিনকাটাতে হচ্ছে। এই পরিবারে চিত্র দেখে মনে পড়ে যায় বিখ্যাত লেখক হুমায়ূন আহমেদ কবিতাটি
“আসমান ভাইঙ্গা জোছনা পড়ে আমার ঘরে জোছনা কই? আমার ঘরে এক হাঁটু জল পানি তে থৈ থৈ। নিশি রাইতে সবাই ঘুমায় আমার চোখের নিদ্রা কোথায় রে? এমনি কইরা দুঃখের বোঝা আর কত কাল বই? আমার ঘরে এক হাঁটু জল পানি তে থৈ থৈ। চাইনি মানিক চাইনি রতন সাধ আঁছিল মনের মতন রে চান্দের আলো উজ্জ্বল ঘরে সুখে দুঃখে রই আমার ঘরে এক হাঁটু জল পানি তে থৈ থৈ”
অনুসন্ধানে জানা যায় রণবীর দেবনাথের জীবণ যাত্রা এমনছিল না। অনেক জমিজমা,টাকা পয়সা ছিল। এক সময় তিনি পরম সুখে জীবণ যাপন করতেন। সংসার জীবনে তাদের ঘরে জন্ম নেয় দুই কন্যা সন্তান। পলি ও পপি। দুই মেয়ে বিয়ে দিয়েছেন। দুই মেয়ের জামাই তাদের সর্বস্ব নিয়েও ক্ষান্ত হয়নি শেষ পর্যন্ত রনবীরের একমাত্র সম্বল ভিটেটাও জোর করে লিখে নেয়। এমনকি বয়স্ক ভাতার টাকা পেলেই এখনও আসেন তাতে ভাগ বসাতে।
রণবীর ও বিভারানী জানান “আমরা এক সময় মানুষকে সহযোগীতা করতাম বাড়িতে থাকতে দিতাম খেতে দিতাম এখন আমরাই থাকার, খাওয়ার পাইনা। আমাদের তিনবেলা মাছ,ডিম,মাংশ ছাড়া ভাত খাওয়া হতো না আর এখন আমরা মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরে ভিক্ষা করি। এই কাজ করতে লজ্জা লাগে তারপরও তাদের দ্বারে দ্বারে যাই,দু মুঠো নুন ভাতের জন্য কারন জীবন যুদ্ধে বেঁচে থাকার প্রয়োজনে অর্ধাহার অনাহারে দিন কাটাচ্ছি।”
Leave a Reply