বৃহস্পতিবার, ১৮ অগাস্ট ২০২২, ০৭:০৪ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার:বাংলাদেশ বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল মাসিহুজ্জামান সেরনিয়াবাত বিবিপি, ওএসপি, এনডিইউ, পিএসসি প্রশিক্ষণ ও অনুশীলনে সমর সংগ্রামে বিমান কর্মকর্তাদের আকাশসীমার অতন্দ্র প্রহরী আর প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় জনগণের বন্ধু হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, একজন পেশাজীবীর প্রধান পরিচয় পেশাগত দক্ষতা। পেশাগত দক্ষতা ও সততার কোনো বিকল্প নেই। পরিশ্রমের নেই কোনো ভিন্ন অর্থ। শৃঙ্খলা, দেশপ্রেম ও জাতীয় চেতনাবোধের নেই কোনো প্রতিস্থাপক।
মঙ্গলবার সকালে তিনি যশোরের বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান বিমান বাহিনী ঘঁাঁটিতে বাহিনীর চারটি ইউনিটকে পতাকা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতা করছিলেন। এই চারটি ইউনিট হলো : বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান বিমানবাহিনী ঘাঁটির ১১ নম্বর স্কোয়াড্রন, ফ্লাইং ইস্ট্রাক্টরস্ স্কুল, অফিসার্স ট্রেনিং স্কুল এবং লালমনিরহাটের বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর তত্ত্বাবধায়ন ও রক্ষণাবেক্ষণ ইউনিট।
অনুষ্ঠানে বিমান বাহিনী প্রধান বলেন, একটি স্বাধীন জাতির বিমান বাহিনীর মূল দায়িত্ব হচ্ছে স্বীয় আকাশসীমার প্রতিরক্ষা নিশ্চিত করা। বাংলাদেশের ভৌগলিক অবস্থান ও সামরিক কৌশলগত দিক, অর্থনৈতিক উন্নয়নের পরিধি ও সম্ভাবনার প্রেক্ষাপট বিবেচনায় রেখে একটি আধুনিক, শক্তিশালী ও পেশাদার বিমানবাহিনী গঠনের প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত ও নির্দেশনায় ইতোমধ্যে বিমান বাহিনীতে শক্তিশালী, দক্ষ এবং আধুনিক করে গড়ে তোলার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। অত্যাধুনিক যুদ্ধ বিমান, হেলিকপ্টার, পরিবহন বিমান, ক্ষেপণাস্ত্র ও উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন এয়ার ডিফেন্স র্যাডার ক্রয়ের কার্যক্রম চলমান রয়েছেÑ যা বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর অবস্থানকে করবে আরও সুদৃঢ়।
তিনি বলেন, বিমান বাহিনীতে যোগদানকৃত নবীন ক্যাডেট পাইলটদের সুচারুরূপে প্রাথমিক প্রশিক্ষণ প্রদানের মহান দায়িত্ব পালনের জন্য ১৯৮২ সালের ১১ এপ্রিল ১১ নম্বর স্কোয়াড্রন প্রতিষ্ঠিত হয়। সর্বোচ্চ নিরাপত্তা বজায় রেখে ১১ নম্বর স্কোয়াড্রন প্রাথমিক উড্ডয়ন প্রশিক্ষণে গুণগত উৎকর্ষতার সাথে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন মাইলফলক অর্জন করে চলেছে। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এই স্কোয়াড্রন দেশি ক্যাডেটদের পাশাপাশি বিদেশি ক্যাডেটদেরও প্রশিক্ষণ প্রদান করেছে। ১১ নম্বর স্কোয়াড্রন থেকে এই পর্যনত ৮৭৩ জন দেশি নবীন ক্যাডেট এবং বন্ধুপ্রতীম দেশসমূহের ২৭ জন ক্যাডেট প্রাথমিক উড্ডয়ন সাফল্যের সাথে সমাপ্ত করেছে। এছাড়া ১১ নম্বর স্কোয়াড্রন ৫ জন নবীন মহিলা বৈমানিককে সাফল্যের সাথে প্রাথমিক উড্ডয়ন প্রশিক্ষণ প্রদান করেছে। একইসাথে এই স্কোয়াড্রন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও নৌবাহিনীর উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কর্মকর্তাদেরও প্রমিক্ষণ প্রদান করেছে।
অনুষ্ঠানে বিমান বাহিনী প্রধান আরো বলেন, প্রাথমিক উড্ডয়ন প্রশিক্ষণের পাশাপাশি ১১ নম্বর স্কোয়াড্রন বিজয় দিবস প্যারেড, বিমান বাহিনী একাডেমি প্যারেডের ফ্লাইপাস্ট এবং দেশি-বিদেশি অতিথিদের সম্মানে আয়োজিত মনোজ্ঞ অ্যারোবেটিকসে সাফল্যের সাথে অংশগ্রহণ করেছে।
তিনি বলেন, বিমান বাহিনী সদস্যরা জন্মলগ্ন থেকে বাংলাদেশের আকাশসীমা প্রতিরক্ষার পাশাপাশি দেশ ও জনগণের সেবায় আত্মনিয়োগ করেছেন। বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে আর্তপীড়িত দেশবাসির সেবায় কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এই বাহিনীর সদস্যরা নিরলসভাবে কাজ করে চলেছেন। সীমিত সম্পদ, প্রশিক্ষণ ও পরিচালনাগত নানাবিধ প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও কেবলমাত্র দেশপ্রেমে উজ্জীবিত, দায়িত্বশীল, সুশৃঙ্খল বাহিনী হিসেবে নিজেদের কার্যক্রমকে আন্তর্জাতিক মানের উন্নীত করার প্রচেষ্টা সকল মহলে প্রশংসিত হয়েছে। ভবিষ্যতে বিমান বাহিনী দেশ ও জাতির জন্যে আরও অনেক গৌরব গাঁথা রচনা করবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
Leave a Reply