বুধবার, ১০ অগাস্ট ২০২২, ০৫:৪৯ অপরাহ্ন
জয় বাংলা নিউজ প্রতিবেদক:
যশোরে বাড়ির সামনে কুপিয়ে ও ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়েছে জেলা যুবদলের সিনিয়র সহসভাপতি বদিউজ্জামান ধনিকে (৫৩)। ধনি শহরের চোপদারপাড়া আকবরের মোড় এলাকার মৃত আব্দুল লতিফের ছেলে।
ঘটনাটি ঘটেছে গত মঙ্গলবার (১২ জুলাই) বেলা ১২ টার দিকে। বুধবার বেলা ১১টার দিকে শংকরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে তার নামাজে জানাজা শেষে বেজপাড়া সরকারি কবর¯’ানে তার দাফন সম্পন্ন হয়। এই হত্যাকান্ডে জড়িত সন্দেহে পুলিশ তিনজনকে আটক করেছে এমন সংবাদ শোনা গেলেও পুলিশের পক্ষ থেকে তা অস্বীকার করা হয়েছে।
ধনি যুবলীগ কর্মী ইয়াসিন হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি ছিলেন। ওই মামলায় কয়েকদিন আগে তিনি জেল থেকে জামিনের মুক্তি পান।
এই ঘটনায় নিহতের ভাই মনিরুজ্জামান মনি ৮জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ৫/৬জনের বিরুদ্ধে কোতয়ালি থানায় একটি লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন।
অভিযুক্তরা হলো, বেজপাড়া টিবি ক্লিনিক ফুড গোডাউনের সামনে আশ্রম রোডের আব্দুল আলীমের ছেলে আকাশ (২৫), মোহাম্মদ ফরিদের ছেলে রায়হান (২৪), শংকরপুর চোপদারপাড়া আকবরের মোড়ের মৃত আব্দুর রশিদের ছেলে শামীম আহমেদ মানুয়া (৪৮), টিবি ক্লিনিক ফুড গোডাউনের পাশের মিরাজু বিশ্বাসের ছেলে মন্টু (২২), টিবি ক্লিনিক এলাকার রইস উদ্দিনের ছেলে আল আমিন ওরফে চোর আল আমিন (২৫), আফসারের ছেলে মিলন (২৪), শংকরপুর হারান কলোনীর উত্তর পাশের বাবু মীরের ছেলে ইছা মীর (২০) এবং চোপদারপাড়া রোডের মৃত হুজুর ইয়াসিনের বাড়ির পাশের লাভলুর ছেলে রিজভী (২৬)।
ধনির পরিবারের দাবি, কিছুদিন আগে দুর্বৃত্ত¡দের হাতে খুন হন একই এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী ইয়াসিন আরাফাত। ইয়াসিনের শ্বশুর যুবদল নেতা শামীম আহমেদ মানুয়ার সাথে ধনির রাজনৈতিক বিরোধ ছিলো। ইয়াসিন খুনের পেছনে ধনির হাত আছে এই সন্দেহে ধনিকে আসামি করা হয়। এরপর থেকে মানুয়া ও তার পরিবারের সদস্যরা ধনিকে খুনের পরিকল্পনা করে। সেই পরিকল্পনার অংশ হিসাবে ধনিকে তার বাড়ির সামনে প্রকাশ্যে খুন করে মানুয়ার ভাগ্নে রায়হান ও তার সঙ্গীরা।
নিহত ধনির ভাই মনিরুজ্জামান মনি জানিয়েছেন, মঙ্গলবার ধনি বাড়ি থেকে বেরিয়ে একটি চায়ের দোকান থেকে চায়ের কাপ নিয়ে বৌরাণী ফার্মেসীর সামেন বসে চান পান করছিলেন। এসময় রায়হানসহ ৬/৭জন সেখানে গিয়ে ধারালো অস্ত্র নিয়ে ধনির উপর আতর্কিত হামলা চালায়। ধনি পালানোর চেষ্টা করলে মানুয়া সামনে এসে বেরিগেট দেয়। পরে ধনি ফের বাড়ির দিকে চলে যেতে চাইলে বৌরাণী ফার্মেসির সামনে তাকে কুপিয়ে ও ছুরিকাঘাতে জখম করা হয়। তার চিৎকার শুনে ঘর থেকে বেরিয়ে আসেন তার স্ত্রী শারমিন সুলতানা। পরে আশেপাশেরও লোকজন এগিয়ে আসে তাকে উদ্ধার করে দ্রæত যশোরে জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিছুক্ষণ পর তার মৃত্যু হয়।
যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ক সার্কেল বেলাল হোসাইন বলেছেন, ধনি হত্যাকান্ডের পরপরই আসামি আটকের জন্য অভিযান চালানো হ”েছ। আশাকরি আসামিরা দ্রæত আটক হবে। কী কারণে হত্যাকান্ড এই বিষয়ে নিহতের পরিবারের সাথে মত পোশন করে বলেছেন, একই এলাকার যুবদল নেতা শামীম আহমেদ মানুয়ার সাথে নিহতের রাজনৈতিক বিরোধ ছিলো অনেক বছর ধরে। কয়েক মাস আগে সন্ত্রাসীদের হাতে নিহত হন মানুয়ার জামায় ইয়াসিন। এই ইয়াসিন হত্যা মামলার আসামি ধনি। সে কারণে প্রতিশোধ হিসাবে মানুয়ার পরিবারের সদস্যরা এই খুনের সাথে জড়িত থাকতে পারে। তবে আসামি আটকের পর প্রকৃত তথ্য বেরিয়ে আসবে বলে তিনি আশা করেন।
এদিকে ধনির মৃত্যুর খবর শুনে হাসপাতালে ছুটে যান বিএনপির খুলনা বিভাগীয় কমিটির ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, যশোর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহŸায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকনসহ জেলা যুবদলের নেতৃবৃন্দ। এছাড়া নিহত ধনির নামাজে জানাজায় যুবদলের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ উপ¯ি’ত ছিলেন। তারা দ্রæত হত্যার সাথে জড়িতদের আটকের দাবি জানান।
এদিকে চোপদারপাড়া আকবরের মোড়ের আকবর আলীর ছেলে শফিকুল ইসলাম বুধবার রাতে কোতয়ালি থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন শামীম আহমেদ মানুয়াসহ তিনজনের বিরুদ্ধে। অপর অভিযুক্তদ্বয় হলো, মানুয়ার ভাগ্নে রায়হানা ও আলীমের ছেলে আকাশ।
শফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, আকবরের মোড়ে তার একটি ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠান আছে। যুবদল নেতা বদিউজ্জামান ধনি খুন হওয়ার কিছু সময় আগে তিনি ওই ¯’ান থেকে চলে যান। মূলত আসামিরা তাকে খুঁজতেই সেখানে যায়। এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। তাকে না পেয়ে বদিউজ্জামান ধনিকে পেয়ে খুন করে।
Leave a Reply