শনিবার, ২৫ Jun ২০২২, ০৪:০৫ পূর্বাহ্ন
জয় বাংলা নিউজ প্রতিবেদক:
চলতি মৌসুমেও দাম আকাশচুম্বী। ব্যবসায়ীরা অসাধু মজুতদারদের দায়ী করছে। সরকার নানা উদ্যোগ নিয়েছে তবুও চালের দাম কমার কোনো লক্ষণ নেই। বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের চাল। এর মধ্যে কোরবানি ঈদ সামনে রেখে রেকর্ড ছুঁয়েছে পোলাও চালের দাম। সূত্রমতে, অসাধু ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্য ঠেকাতে চাল আমদানির সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এছাড়া ধান-চালের দাম বাড়ানোর পেছনে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সরকারের বিভিন্ন সংস্থা একযোগে কাজ করছে। এর মধ্যে রয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়, জেলা প্রশাসন ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
বৃহস্পতিবারও দেশের আট বিভাগে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে অভিযান চালিয়ে অনিয়মের দায়ে জরিমানা করা হয়েছে। রাজধানীর বিভিন্ন কাঁচাবাজার ও পাড়া-মহল্লায় চালের দামে কেজিতে ১-২ টাকা হেরফের রয়েছে।
খুচরায় এখনো কেজিতে সরু চাল বিক্রি হচ্ছে ৭০-৭৫ টাকায়। অথচ ভরা মৌসুমে এর আগে কখনই এত দামে সরু চাল বিক্রি হয়নি। খুচরা দোকানে এখন মাঝারি ধরনের চাল বিক্রি হচ্ছে ৬০-৬২ টাকায় ও মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৫২-৫৬ টাকা কেজি। আর নাজিরশাইল চাল বিক্রি হচ্ছে ৮০-৮৫ টাকায়। বাজার ভেদে কেজিতে এই দাম ১-২ টাকা কম বেশি। খুচরা ব্যবসায়ীরা জানান, এই বাড়তি দাম কয়েক সপ্তাহ ধরেই চলছে। এখন বাজার ঠাণ্ডা। তাই দাম বাড়ছেও না, কমছেও না। দেশে এখন বন্যা হচ্ছে। তাই দাম কমার সম্ভাবনা কম। তবে বাড়বে কিনা তা নিয়েও পরিষ্কার বলতে পারছেন না তারা।
ইস্যু পেলেই চালের দাম বাড়িয়ে দেয়া হয়। এখন বিভিন্ন কোম্পানি চালের ব্যবসার সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে। তারাই চালের দাম নিয়ন্ত্রণ করে। ভরা মৌসুমেও তাই চালের দাম কমার কোনো লক্ষণ দেখছি না। অন্য সময় অন্তত এই মাসে চালের দাম স্বাভাবিক থাকে। সরকারি বিপণন সংস্থা টিসিবি’র বাজার পর্যবেক্ষণ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, শনিবার প্রতিকেজি ৭৪ থেকে ৭৫ টাকার মধ্যে সরু চাল বিক্রি হয়েছে। এক সপ্তাহ আগে এ ধরনের চালের সর্বোচ্চ মূল্য ছিল ৭২ টাকা। মাঝারি চাল বিক্রি হয়েছে প্রতিকেজি ৫২ থেকে ৬০ টাকার মধ্যে, এক সপ্তাহ আগেও একই দামে বিক্রি হয়েছিল। গত সপ্তাহের মতোই ৪৮ থেকে ৫২ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে মোটা চাল। যদিও খুচরা বাজার ও বিভিন্ন পাড়া-মহল্লা ঘুরে এই দামের চেয়েও মাঝারি ও মোটা চাল কেজিতে ২-৩ টাকা বেশিতে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
টিসিবি’র পরিসংখ্যান বলছে, এক মাসের ব্যবধানে সরু চালের দাম বেড়েছে প্রায় ৯ শতাংশ। আর মাঝারি চালে ৯.৮ শতাংশ এবং মোটা চালে ৭.৫৩ শতাংশ দাম বেড়েছে। এক বছর আগের তুলনায় দাম বেড়েছে সরু চাল ১৩ শতাংশ, মাঝারি চাল ৮ শতাংশ এবং মোটা চাল ৯ শতাংশ। এদিকে আসছে কোরবানির ঈদ। ঈদ উপলক্ষে প্রত্যেক পরিবারেই থাকে বাড়তি আয়োজন। ধনী ছাড়াও নিম্নআয়ের মানুষও চেষ্টা করেন পোলাও-মাংস খাওয়ার। অথচ এবার কোরবানি ঈদের আগেই চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে পোলাও (চিনিগুড়া) চাল। বাজারে এখন ভালো মানের এককেজি খোলা পোলাও চাল বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকা থেকে ১১৫ টাকা। আর প্যাকেটজাত পোলাও চাল বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকা থেকে ১৪০ টাকা পর্যন্ত। কিছুদিন আগেও ৯৫ থেকে ১০০ টাকার মধ্যে ভালো মানের খোলা পোলাও চাল পাওয়া যেত। অথচ এখন তা কেজিতে বেড়েছে ২০ টাকা পর্যন্ত। আর প্যাকেটজাত পোলাও চাল বিক্রি হতো ১১০ টাকায়। এখন তা দোকানভেদে ২০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
Leave a Reply