মঙ্গলবার, ২৮ Jun ২০২২, ১২:১৫ অপরাহ্ন
জয় বাংলা নিউজ প্রতিবেদক:
সিলেট ও সুনামগঞ্জে বানভাসিদের জরুরী স্বাস্থ্যসেবার জন্য ২০০টি মেডিক্যাল টিম পাঠিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতিতে জরুরী স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের লক্ষ্যে ৪ হাজার মেডিক্যাল টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে। তবে ভাসমান চিকিৎসা কেন্দ্র করার মতো কোন উপকরণ নেই বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। রবিবার রাজধানীর হোটেল রেডিসনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানান, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বপন। এসটিএইচ সামিট ২০২২ শীর্ষক অনুষ্ঠানের উদ্বোধনীতে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তিনি।
পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপ করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। এ সময় তিনি বলেন, সিলেট মেডিক্যাল হাসপাতালে পানি উঠে গেছে। এর ফলে বিদ্যুত বিচ্ছিন্ন হয়েছে। এ ছাড়াও অনেক হাসপাতাল ডুবে গেছে, এ জন্য আমরা বিকল্প যেসব হাসপাতালে রোগী নেয়া সম্ভব সেখানে নিয়ে যাচ্ছি। আইসিইউ রোগীদের হাসপাতাল পরিবর্তন করা হবে বলেও তিনি জানান। বন্যাপ্লাবিত অঞ্চলে ভাসমান হাসপাতাল চালু করার বিষয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়া হবে। জরুরী সেবা চালু করতে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে হেলিকপ্টারও চাওয়া হবে।
মন্ত্রী বলেন, দেশে প্রতিবছর বন্যা হয়। কিন্তু স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নিজস্ব কোন হেলিকপ্টার, পানিতে চলার এ্যাম্বুলেন্সসহ কোন পরিবহন ব্যবস্থা নেই। আমরা সরকারের কাছে বিষয়টি তুলে ধরব। তিনি বলেন, সিলেট অঞ্চলের সব পর্যায়ের চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীর ছুটি বাতিল করা হয়েছে। প্রতিকূল পরিবেশ থাকলেও পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট, স্যালাইন, ওষুধ ও সাধ্য অনুযায়ী খাদ্য পাঠানো হচ্ছে।
জাহিদ মালেক বলেন, সিলেটসহ কয়েকটি জেলা ব্যাপক বন্যার কবলে পড়েছে। কিছু কম আর কিছু বেশি। বিশেষ করে সিলেট ও সুনামগঞ্জের অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। এজন্য ঢাকার স্বাস্থ্য অধিদফতরে কন্ট্রোল রুম করা হয়েছে। স্থানীয়ভাবেও করা হয়েছে। আমাদের ডাক্তার নার্সসহ অন্যরাও সেবা দিচ্ছে। টিম ওয়ার্কের মাধ্যমে কাজগুলো করা হচ্ছে।
মন্ত্রী আরও বলেন, স্থানীয় হাসপাতালে বিভিন্ন জটিলতা নিয়ে রোগী ভর্তি আছে। কিন্তু পানি উঠে যাওয়ায় তাদের অন্য স্থানে নেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মীদের মধ্যে যারা যোগাযোগ-বিচ্ছিন্ন তাদের খাবার ও জরুরী অন্যান্য সহায়তা পাঠানো হয়েছে বলেও জানান জাহিদ মালেক।
এর আগে সামিটের উদ্বোধনী বক্তৃতায় মন্ত্রী বলেন, দেশে এক সময় কৃমিরোগে আক্রান্তের সংখ্যা ৮০ শতাংশ ছিল, এখন সেটি প্রায় নির্মূলের দ্বারপ্রান্তে চলে এসেছে। আগে পরীক্ষা করলে ৮০ শতাংশ কৃমিরোগ পাওয়া যেত। এখন সেটি ৭ থেকে ৮ শতাংশে নেমে এসেছে। এর জন্য মাল্টি সেক্টর কাজ করেছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, এসব কারণে আমরা সফল হতে পেরেছি। কৃমিরোগ আমরা প্রায় নির্মূল করতে সক্ষম হয়েছি।
মন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে কৃমিরোগ ব্যাপকহারে ছিল। ২০০৬ সালে শুরু হয়, এখন সেটির ব্যাপ্তি ৬৪ জেলায়। ৬ থেকে ১২ বছর বয়সী প্রায় দুই কোটি শিশুকে বছরে দুই বার কৃমিনাশক খাওয়ানো হয়।
সাম্প্রতিক সময়ের করোনা সংক্রমণের উর্ধগতির বিষয়ে তিনি বলেন, করোনা পরিস্থিতি কিছুটা বেড়েছে। গত সপ্তাহের আগে থেকে বাড়তে শুরু করেছে। এটি ৩০ থেকে ৩৫ জনে ছিল। সংক্রমণ বাড়তে থাকলে মৃত্যু বাড়বে। আমরা যদি টিকা গ্রহণ করি তাহলে আমাদের প্রতিরোধী শক্তি বৃদ্ধি পাবে। বুস্টার ডোজ নেয়াটা খুব জরুরী। আমি সবাইকে বুস্টার ডোজ নেয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাপক ডাঃ নাজমুল ইসলাম। এ সময় অধিদফতরের সহকারী পরিচালক ও প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডাঃ এম এম আকতারুজ্জামান স্বাগত বক্তব্য উপস্থাপন করেন। এ ছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব ডাঃ মোঃ আনোয়ার হোসেন হাওলাদার। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডাঃ আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশিদ আলম।
Leave a Reply