লাশ কাঁধে অবিরাম হেঁটে চলা
অরুণ বর্মন
জীবন মানসিক ডিপ্রেশনে আজ জরাগ্রস্ত
মধ্য দুপুরে করেছে আত্মহত্যা।
লাশ পোস্টমর্টেমের জন্য আছে লাশকাটা ঘরে।
নিজে ডোম সেজে ঢুকে পড়লাম সেই ঘরে।
নিজের লাশ নিজেই করব তদন্ত।
মর্গের টেবিলের উপর সাজানো লাশ;
সমস্ত শরীর কষ্টের বিষক্রিয়ায় নীললোহিত,
মুখে যাপিত জীবনে অতৃপ্ত বাসনার ফেনা।
চোখ দুটো ফেটে বেরিয়ে আসছে ঘৃণা, বিতৃষ্ণা, বিদ্বেষ।
নাসিকাদ্বয় জীবনের প্রতি বীতশ্রদ্ধ হয়ে নিঃশ্বাসহীন।
ধীরে ধীরে এগিয়ে গেলাম লাশ বরাবর;
হাত দিলাম আড়ষ্ট লাশের গায়।
মনে হলো যেন
সংস্কারের রৌদ্রে শুকানো শক্ত কাঠ।
ব্যবচ্ছেদ করলাম হৃদপিন্ড-
দেখতে পেলাম
ডান অলিন্দ, ডান নিলয় এখনও কিছুটা সজিব।
এখনও বহন করে চলেছে প্রেমহীন দায়িত্ব কর্তব্যের কার্বনডাই অক্সাইড।
কিন্তু বাম অলিন্দ, বাম নিলয় মৃত,
বিশুদ্ধ প্রেমের অক্সিজেন না পেয়ে অবজ্ঞায়, অবহেলায়, অপমানে করেছে আত্মহনন।
ব্যবচ্ছেদ করলাম মস্তিষ্ক
নিউরণগুলো বারবার না পাওয়ার ব্যাথা গলাধঃকরণ করেছিল বহু কষ্টে;
কিন্তু আজ পেয়ে হারানোর যন্ত্রণায় তার এই মৃত্যু।
তারপর—
ব্যবচ্ছেদ করা লাশ কাঁধে নিয়ে
অবিরাম হেঁটে চললাম অন্তিম দাফনে।
Leave a Reply