মঙ্গলবার, ২৮ Jun ২০২২, ০৫:৩২ অপরাহ্ন
জয় বাংলা নিউজ প্রতিবেদক:
সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ নবী হজরত মুহাম্মদ সা: এবং উম্মুল মু’মিনিন হজরত আয়েশা সিদ্দিকা (রা:) সম্পর্কে ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপি নেতা নূপুর শর্মা ও নবীন কুমার জিন্দালের অশালীন, কুৎসিত ও বাজে মন্তব্যেও প্রতিবাদে শনিবার বিকেলে যশোর শহরে জেলা ইমাম পরিষদের বিশাল প্রতিবাদ সমাবেশ হয়েছে।
শহরের দড়াটানা ভৈরব চত্বরে আয়োজিত এ বিক্ষোভ সমাবেশে সর্বস্তরের ধর্মপ্রাণ মানুষের ঢল নামে। মিছিলপূর্ব সমাবেশে যশোরের শীর্ষস্থাণীয় ঊলামায়ে কেরামগণ এ ঘটনার জন্য বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম মুসলিম রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ সরকারের ভূমিকা নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেন।
এসময় নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে ভারতীয় রাষ্ট্রদূতকে তলব করে কটূক্তির বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রতিবাদ জানানোর পাশাপাশি চলমান সংসদে বিল উত্থাপনের মাধ্যমে নিন্দা প্রস্তাব আনার দাবি জানান। একই সাথে এ ঘটনার প্রতিবাদে ভারতের সাথে সকল ধরনের কুঠনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে তাদের সকল পণ্য বর্জনপূর্বক জাতীয় সংসদে আল্লাহ, রাসুল সা: ও ধর্মীয় বিষয় নিয়ে অবমাননার রাষ্ট্রীয় আইন পাশ করার দাবি জানান। এসব দাবি মেনে না হলে গোটা দেশে আন্দোলনের দাবানল ছড়িয়ে দেয়ার হুশিয়ারি দেন উলামা মাশায়েখরা।
যশোর জেলা ইমাম পরিষদের সভাপতি বর্ষীয়াণ আলেম মাওলানা আনোয়ারুল করীম যশোরীর সভাপতিত্বে ও সংগঠনটির সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতি কামরুল আনোয়ার নাঈমের পরিচালনায় প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সমাবেশে উলামাদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, জেলা ইমাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক হাফেজ মাওলানা মো. বেলায়েত হোসেন,সংগঠনটির উপদেষ্টা মাওলানা আব্দুল মান্নান, মুফতি মো. মুজিবুর রহমান, মাওলানা মো. হামিদুল ইসলাম, সহসভাপতি মুফতি শামসুর রহমান, যুগ্ম সম্পাদক মাওলানা নাজির উদ্দিন, ইমাম পরিষদ যশোর নগর শাখার সভাপতি মুফতি মো. হাফিজুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মুফতি আব্দুর রহমান এজাযি, যশোর সদর উপজেলা কমিটির সভাপতি মাওলামা আমানুল্লাহ কাসেমি,সাধারণ সম্পাদক মুফতি উবায়দুল্লাহ শাকির, জেলা ইমাম পরিষদের দপ্তর সম্পাদক মুফতি মাহমুদুল হাসান যশোরী, নির্বাহী সদস্য মাওলানা ইমাদুল হক ও মুফতি মাসউদুর রহমান।
বিক্ষোভ সমাবেশে উলামায়ে কেরামগণ বলেন, যেকোনো ধর্ম পালনের ব্যাপারে সবারই স্বাধীনতা রয়েছে। কোনো ধর্মই কাউকে অন্য ধর্ম সম্পর্কে বিদ্বেষপূর্ণ ও অশালীন মন্তব্য করতে উৎসাহিত করে না। অথচ ভারতে বিজেপির জাতীয় মুখপাত্র নূপুর শর্মা এবং দিল্লি মিডিয়া অপারেশন টিমের সদস্য নবীন কুমার জিন্দাল মহানবী হজরত মুহাম্মদ সা:-কে নিয়ে যে কটূক্তিপূর্ণ মন্তব্য করেছে তা চরম ধৃষ্টতাপূর্ন। এজন্য তাদেরকে শুধু বহিষ্কার নয়; অবিলম্বে তাদেরকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন তারা।
নেতৃবৃন্দ বলেন, মহানবী স. এর অবমাননা করে বিশ্ব-মুসলিমের কলিজায় আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। বিশ্বের মুসলিম রাষ্ট্রগুলো আজ ফুঁসে উঠেছে। তারা রাষ্ট্রীয়ভাবে এর তীব্র প্রতিবাদ ও ঘৃণা প্রকাশ করে চলেছেন। অথচ আমাদের ৯০ শতাংশ মুসলমান রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে কোনো কথা না বলে তামাশা। বক্তারা বলেন, এদেশে যদি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমালোচনা করলে তাকে পাতাল থেকে তুলে এনে বিচারের আওতায় আনা হয়। তাহলে ৯০ শতাংশ মুসলমানের রাষ্ট্রে আমার নবীর অবমাননার বিষয়ে সরকার কেনো নীরব থাকবে। সরকারের এই নতজানু নীতি এদেশের তৌহিদী জনতা কোনো ভাবেই মেনে নেবেনা। সমাবেশ থেকে অবিলম্বে চলমান সংসদে এ বিষয়ে বিল উত্থাপনের মাধ্যমে নিন্দা প্রকাশ করার পাশাপাশি ভারতীয় রাষ্ট্রদূতকে ডেকে আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ জানাতে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহবান জানানো হয়। অন্যথায় এর বিরুদ্ধে গোটাদেশে আন্দোলনের দাবানল ছড়িয়ে দেয়ার হুশিয়ারি দেন উলামায়ে নেতৃবৃন্দ।
সমাবেশের ম থেকে প্রায় প্রত্যেক বক্তা তাদের বক্তব্যে উপস্থিত তৌহিদী জনতাকে ভারতকে বয়কটের আহবান জানান। এসময় নেতৃবৃন্দ ইসলামের দূশমণ ভারতের সকল পণ্য বর্জণের জন্য সকলের প্রতি আহবান জানান। এসময় মূহুর্মূহ স্লোগানে স্লোগানে গোটা দড়াটানা এলাকা প্রকম্পিত হয়ে ওঠে।
বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ সা: এবং উম্মুল মু’মিনিন হজরত আয়েশা সিদ্দিকা (রা:) সম্পর্কে ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপি নেতা নূপুর শর্মা ও নবীন কুমার জিন্দালের অশালীন, কুৎসিত ও বাজে মন্তব্যেও প্রতিবাদে ও তাদের ফাঁসি দাবিতে স্মরণকালের বৃহৎ মিছিল বের করে তৌহিদী জনতা। এসময় দড়াটানা মোড় থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে তা এগিয়ে যেতে থাকে শহরের এমকে রোড হয়ে। দীর্ঘ কয়েক কিলো মিছিল চলমান থাকলেও দড়াটানা মোড় থেকে যেনো মিছিলের স্রোত শেষ হচ্ছিলোনা। মিছিলে নারায়ে তাকবীর আল্লাহু আকবর, আমার নেতা তোমার নেতা বিশ্ব নবী মোস্তফা স. স্লোগানে উত্তাল হয়ে পড়ে গোটা যশোর। পরে দীর্ঘ মিছিলটি শহরের পুরাতন বাস টার্মিনাল মনিহার মোড় এলাকায় গিয়ে শেষ হয়।
Leave a Reply