শুক্রবার, ২০ মে ২০২২, ০৮:৫৯ অপরাহ্ন
জয় বাংলা নিউজ ডেস্ক:
মানবাধিকার প্রতিবেদনের সঙ্গে আমরা একমত নই, বরং অনেক ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি ভালো।’
পয়লা বৈশাখের সন্ধ্যায় রাজধানীর কুর্মিটোলায় পাম ভিউ রেস্তোরাঁয় বাংলাদেশ সম্পাদক ফোরাম আয়োজিত ‘মাহে রমজান ও গণমাধ্যম’ শীর্ষক আলোচনা ও ইফতারের আগে এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মানবাধিকার প্রতিবেদনটি আমি দেখেছি। আমরা এই রিপোর্টে বাংলাদেশ বিষয়ে প্রতিবেদনের সঙ্গে একমত নই। আমরা মনে করি, এ প্রতিবেদনের তথ্য-উপাত্ত নির্দিষ্ট কিছু সূত্র থেকে সংগ্রহ করা হয়। সেই সূত্রগুলো একপেশে ও অনেক ভুল তথ্য সরবরাহ করায় প্রতিবেদনটি এমন হয়েছে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে অনেক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে ভালো, সব ক্ষেত্রে না হলেও। কারণ, যুক্তরাষ্ট্রের গুয়ানতানামো বেতে যেভাবে মানুষকে নির্যাতন করা হয়, সে ধরনের কোনো কারাগার আমাদের দেশে নেই।
যুক্তরাষ্ট্রে যেভাবে জর্জ ফ্লয়েডকে হত্যা করা হয়েছে, আমাদের দেশে কখনো এ ধরনের হত্যাকাণ্ড হয়নি। মার্কিন পার্লামেন্টে যেভাবে হামলা করে চারজনকে হত্যা করা হয়েছে, স্পিকারের চেয়ারে দুষ্কৃতকারী বসে ছিল, এমন কোনো ঘটনা আমাদের দেশে ঘটেনি।’
মন্ত্রী বলেছেন, ‘গত ১০ বছরের পরিসংখ্যানমতে যুক্তরাষ্ট্রে জনসংখ্যার ১৮ শতাংশ হিসপানিক ও ১২ শতাংশ কৃষ্ণাঙ্গ হলেও পুলিশের গুলিতে নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে এই ৩০ শতাংশের মানুষই অর্ধেকের বেশি। এসব কারণে অনেক ক্ষেত্রেই যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি ভালো।’
মার্কিন প্রতিবেদন পরীক্ষা–নিরীক্ষা করার কথা জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দেশে বিচার বিভাগ অত্যন্ত স্বাধীনভাবে কাজ করে। সে কারণেই সরকারের বিরুদ্ধে রায় হয় এবং সরকারি দলের এমপিরা জেলে যান।’
তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। মানবাধিকার প্রতিবেদনে যে নিরাপত্তা বাহিনীর কথা আছে, সেই নিরাপত্তা বাহিনীও যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে কারিগরি সহায়তা পাচ্ছে। এ কারিগরি সহায়তাসহ অন্যান্য বিষয়ে সহায়তার মাধ্যমে আমাদের যদি কোনো ত্রুটিও থেকে থাকে, তা ভবিষ্যতে সংশোধনের সুযোগ রয়েছে বলে আমি মনে করি।’
এ সময় অপর এক প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘সম্প্রতি বিশ্বব্যাংক তাদের প্রতিবেদনে চলতি বছর দেশের অর্থনীতিতে উচ্চ প্রবৃদ্ধির আভাস দিয়েছে। করোনা পরবর্তী সময়ে যে আমাদের অর্থনীতি সুদৃঢ়ভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে, সেটিও বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। যাঁরা রাতবিরাতে সমালোচনা করেন, আমি আশা করি তাঁরা এই প্রতিবেদনের পর বিরূপ সমালোচনা বন্ধ করবেন।’
বাংলাদেশ সম্পাদক ফোরামের উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন তথ্য ও সম্প্রচারসচিব মো. মকবুল হোসেন, প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হক, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য মোজাফফর হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক নাঈমুল ইসলাম খান, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন, বিএফইউজে সভাপতি ওমর ফারুক, মহাসচিব দীপ আজাদ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি সোহেল হায়দার চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসেন, বাংলাদেশ সম্পাদক ফোরামের আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম রতন প্রমুখ।
Leave a Reply