বুধবার, ১৮ মে ২০২২, ১২:০৯ পূর্বাহ্ন
জয় বাংলা নিউজ ডেস্ক:
চলতি বছর চিপের চাহিদা নিচের দিকে থাকবে। এছাড়া বছরব্যাপী গাড়ি চিপের সরবরাহ কম থাকবে। ভোক্তা ইলেকট্রনিকস নির্মাতাদের চিপের চাহিদা কমবে। বেশ কয়েকটি শিল্প সূত্রের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে ডিজিটাইমস।
শুরুতে গুঞ্জন ছিল ভোক্তা ইলেকট্রনিকস খাতে চাহিদা হ্রাসের ফলে গাড়ি চিপের সরবরাহ বাড়বে। কিন্তু সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিদ্যমান পরিস্থিতিতে এমনটা হচ্ছে না। ভোক্তা ইলেকট্রনিকস ডিভাইসের চিপ কখনো কার-গ্রেড চিপের বিকল্প হতে পারে না।
গত বছরেও চিপ সরবরাহে হিমশিম খেয়েছে গাড়ি ও ভোক্তা ইলেকট্রনিকসের চিপ নির্মাতারা। এদিকে সরবরাহ চেইন সংকট আমলে নিয়ে চলতি বছরে দাম বাড়িয়ে দিয়েছে চিপ সরবরাহকারীরা। এমনকি তারা গ্রাহকদের কাছ থেকে আগাম অর্থ ও দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি দাবি করছে।
বৈদ্যুতিক গাড়ি বা ইভিতে চিপের প্রয়োজনীয়তা আরো বেড়েছে।
প্রথাগত জীবাশ্ম জ্বালানিচালিত গাড়ির তুলনায় সাধারণ একটি ইভিতে দুই শতাধিক চিপ ব্যবহূত হয়। বর্তমানে গাড়ি চিপের আকাশচুম্বী চাহিদার বিষয়টি গাড়ি নির্মাতা কোম্পানিগুলোও আঁচ করতে পারেনি। মূল্যস্ফীতি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও অন্যান্য ভূরাজনৈতিক ঝুঁকির কারণে চলতি বছর চিপ সরবরাহ কম থাকবে।
এদিকে কুনশান ও সাংহাইয়ে লকডাউন প্রলম্বিত হওয়ায় সরবরাহ ঝুঁকি আরো বেড়েছে। বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ ম্যানুফ্যাকচারিং হাব সাংহাইয়ে সম্প্রতি করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধিতে কয়েক দফা লকডাউন দেয়া হয়েছে। গতকাল সাংহাই ও নিকটবর্তী আরেক শিল্পাঞ্চল কুনশানে কারখানা বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে ইলেকট্রনিক যন্ত্রাংশ উৎপাদনকারী ডজনখানেক প্রতিষ্ঠান।
কারখানা কার্যক্রমে সাম্প্রতিক বিঘ্ন ঘটায় চীনের অর্থনীতিতে শ্লথগতির আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। সরকারি উপাত্তে দেখা গেছে, মঙ্গলবার সাংহাইয়ে করোনা সংক্রমণ রেকর্ড সর্বোচ্চে পৌঁছেছে। কঠোর লকডাউন সত্ত্বেও ওইদিন ২৬ হাজার ৩৩০ জন করোনা পজিটিভ শনাক্ত হন। যুক্তরাষ্ট্র তার অগুরুত্বপূর্ণ কনস্যুলার স্টাফদের সাংহাই ত্যাগের নির্দেশ দিয়েছে। লকডাউনের ফলে ট্রাক পরিবহন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, যা বৈশ্বিক বাণিজ্যে গভীর প্রভাব রাখতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা।
নমুরা হোল্ডিংয়ের অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বর্তমানে চীনের প্রায় ৪৫টি শহর ও ৩৭ কোটি ৩০ লাখ মানুষ আংশিক বা সম্পূর্ণ লকডাউনের মধ্যে রয়েছে। এক সপ্তাহ আগেও এ সংখ্যা ছিল ২৩ শহর ও ১৯ কোটি ৩০ লাখ মানুষ। সাম্প্রতিক লকডাউনের প্রভাব পড়েছে চীনের অর্থনীতিতে। গত মার্চে দেশটির আমদানি ২০২০ সালের আগস্টের পর কমেছে।
চীনভিত্তিক ইভি নির্মাতা কোম্পানি নিও গত রোববার কারখানা বন্ধের ঘোষণা দেয়। গতকাল সাংহাইয়ে কারখানা বন্ধের ঘোষণা দেয় ৩০টিরও বেশি তাইওয়ানিজ ইলেকট্রনিক কোম্পানি।
সাংহাইয়ের ৩০ মাইল পশ্চিমে অবস্থিত কুনশানে তাইওয়ানিজ কোম্পানির উপস্থিতি লক্ষণীয়। ভোক্তা ইলেকট্রনিকস, গাড়ি ও অন্যান্য শিল্পের জন্য সার্কিট বোর্ড ও অন্যান্য উপকরণ তৈরি করে তারা। নতুন ধাপের লকডাউনে কুনশানে কার্যক্রম বন্ধ করেছে ইউনিমাইক্রন টেকনোলজি, এসন প্রিসিজন, এলিট ম্যাটেরিয়ালসহ বেশকিছু তাইওয়ানিজ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান। এভারস্ট্রিম অ্যানালিটিকস জানায়, লকডাউনের ফলে ১৫টিরও বেশি কোম্পানি তাদের কারখানা বন্ধ করেছে।
বেশির ভাগ আন্তর্জাতিক উড়োজাহাজ সংস্থা পুডং বিমানবন্দরে ফ্লাইট বন্ধ করেছে। লজিস্টিকস কোম্পানিগুলো ঝেংঝু, কিংডাও ও বেইজিংয়ের বিকল্প রুটে চালান পাঠানোর চেষ্টা করছে। সাংহাইয়ে সব ফ্লাইট বন্ধ ঘোষণা করেছে ডেল্টা এয়ারলাইনস। ১৮ এপ্রিল নাগাদ আমদানি-রফতানি কার্গো পরিবহনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে তারা।
Leave a Reply