মঙ্গলবার, ২৮ মার্চ ২০২৩, ০৩:৩৪ পূর্বাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার: রোববার দুপুরে যশোর বাঘারপাড়া থানার পুলিশ উপজেলার বাসুয়াড়ী গ্রাম অভিযান চালায়। এ সময় থেকে হত্যা চেষ্টা মামলার চার আসামীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আটককৃত আসামীরা হলেন (১) সাহাদৎ মোড়ল,(২) জাহিদ মোড়ল (৩) সাহাজান মোড়ল পিতা পুড়া খালেক,গ্রাম বাসুয়াড়ী, থানা বাঘারপাড়া,যশোর, (৪) আলমঙ্গীর মোড়ল,পিতা: সাহাজান মোড়ল।
মামলায় জানা যায়, আসামীদের সহিত বাদিনীর দীর্ঘ দিন যাবত জমা-জমি সংক্রান্ত বিষয়াদি লইয়া পূর্ব শত্রুতা চলছিলো। আসামীরা বাদিনী এবং তদ্বীয় পরিবারের সদস্যদের প্রতি প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য প্রতিনিয়ত সুযোগ খুঁজিতে থাকে। আটককৃত আসামীরা ২ই ফেব্রুয়ারী ২০১৯ বাগডাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির মেধাবী ছাত্র সাইফুল ইসলাম ও তার খালাত ভাই বাচ্চুকে সঙ্গে নিয়ে বাগডাঙ্গা গ্রামের জালালের বাড়িতে দাওয়াত খেতে যাচ্ছিল। যশোর-হ-১৬-২৫১৭ নম্বার ভাড়াকৃত মটরসাইকেলটি বাগডাঙ্গা স্কুলের অদুরে তালেরসারী নামক স্থানে রেজাউলের আমবাগানের সামনে পৌচ্ছানোর সাথে সাথে আসামীরা মটরসাইকেলের গতি রোধ করেন এবং এলোপাতাড়ি মারপিট শুরু করলে সাথে থাকা খালাতো ভাই বাচ্চু দৌড়ে পালিয়ে যায়। এর পর আসামীরা সাইফুলকে গরু জবাই করা চাপট,রড,হাতুড়ী দিয়ে এলোপাতাড়ি মারপিট করে এবং তাদের মধ্যে একজন সাইফুলের বুকের উপরে বসে তার গলায় গরু জবাই করা চাপট ধরে। এসময়ে সাইফুল তাদের কাছে জীবন ভিক্ষা চাইলে তারা বলে জীবন ভিক্ষা দিতে পারি একটি শর্তে তুই যদি বাড়িতে যেয়ে বলিস তোর বাবা ও তোর চাচাও চাচতো ভাই রাহুল তোকে মেরেছে তাহলে তোকে ছেড়ে দিতে পারি। আর বাড়িতে যে তাদের নামে মামলা করবি। মামলা করার পরে তোর চিকিৎসার জন্য আমরা তোকে তিন লাখ টাকা রেখে দিয়েছি। খুলনায় এক ডাক্তারের সাথে আমরা কথা বলেছি আমরা তোকে সেখানে নিয়ে যাব। তবে সেখানে তোর সাথে তোর পরিবারের আর কেউ যেতে পারবে না। তোর বাবা চাচারা আমাদের কাছে যে জমি-জায়গা পাবে তার সবই অংশই তোর নামে লিখে দেব। জীবন বাঁচাতে সাইফুল আসামীদের কথায় রাজী হয়ে যায়। এর পরে আসামীরা সাইফুলকে সেখানে ফেলে পালিয়ে যায়। পরে তাদেরই কিছু লোক যেয়ে প্রচার করতে থাকে সাইফুল একসিডেন্ডট করেছে। কিছু সময় পরে সাইফুলের খালাত ভাই বাচ্চু ভিকটিম সাইফুলের চাচতো ভাই ইমরান হোসেন রাহুলকে নিয়ে ঘটনাস্থলে যেয়ে মুমূর্ষ অবস্থায় সাইফুলকে উদ্ধার করে প্রথমে অভয়নগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসকরা জানায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা মেডিকেলে নিতে হবে। কিন্তু ভিকটিম সাইফুলের পরিবার অর্থনৈতিক ভাবে অসচ্ছল হওয়ায় সাইফুলকে কয়েক দিন নিজ বাড়িতে রেখে চিকিৎসার খরচ যোগাতে আতœীয়-স্বজনের কাছ হাত পাততে থাকে। এসময়ের মধ্যে ভিকটিম ও আসামীদের বাড়ি পাশাপাশি হওয়ায় ভিকটিম সাইফুলকে আসামীরা আরেক দফায় একটি ঘরের মধ্যে নিয়ে তার গলায় চাপট ধরে এবং বাবা,চাচাও চাচতো ভাইকে বাদি করে মামলা দায়ের করার জন্য হুমকি দেয়। পরের দিন সাইফুল বাড়ি থেকে পালিয়ে অনেক কষ্টে শহরে তার এক চাচার বাসায় ওঠে। পরে তার চাচা তাকে নিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। ডাক্তারা তাকে পরীক্ষ-নিরীক্ষা করে বলেন, তার বাম হাতের হাতের কয়েকটি শিরা ছিড়ে গেছে। এ চিকিৎসা ঢাকা মেডিকেলে একেবারেই অসসম্ভাব। চিকিৎসকরা উন্নত চিকিৎসা জন চিকিৎসকরা তাকে ভারতে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। ভিকটিম সাইফুল ইসলাম অর্থাভাবে এখন মৃত্যুর সাহিত পাঞ্জা লড়ছে। উল্লেখ্য এর আগে সাইফুলের মা বাদি বিউটি বেগম স্থানীয় থানায় মামলা করিতে গেলে স্থানীয় থানা কর্তৃপক্ষ রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে বাদির মামলা নেয়নি। পরে বাদি বিউটি বেগম ২৮ই এপ্রিল বিজ্ঞ অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিট্রেড বাঘারপাড়া আমলী আদালত, যশোরে উপস্থিত হয়ে ৫ জনকে আসামীকে একটি মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলটি আমলে নিয়ে আসামীদের ধরতে বাঘারপাড়া থানা পুলিশকে নির্দেশ দেন। এক পর্যায়ে মামলাটির তদান্ত অফিসার ইজাজ রোববার দুপুরে বাসুয়াড়ী গ্রামে অভিযান চালিয়ে ৪ জনকে আটক করতে সক্ষম হলেও অপার এক আসামী পালিয়ে যায়।
বিষয়টি নিয়ে মামলার তদান্ত কর্মকর্তা ইজাজের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, ভাই ঘটনাটি সুপরিকল্পিত। ঘটনার সাথে জড়িত থাকার দায়ে ৪জন আসামীকে আটক করা হয়েছে। অপার এক আসামী পলাতক রয়েছে। তাকে ধরার জন্য বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালানো হচ্ছে। আগামীকালই আটককৃতদের আদালতে হস্তন্তর করা হবে বলে তিনি জানান।
Leave a Reply