শনিবার, ০১ এপ্রিল ২০২৩, ১২:৩৫ পূর্বাহ্ন
জয় ডেক্স:তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা দিতে বসতে হবে না আগামী বছর থেকেই। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন।রোববার দুপুরে সচিবালয়ে প্রাথমিক বৃত্তির ফল প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান।
শিশুদের ওপর পড়ালেখার চাপ কমানোর কথা চিন্তা করে ও প্রাথমিকে ঝরেপড়া কমানোর বিষয়ে গুরুত্বারোপ করে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পরীক্ষা না রাখার বিষয়ে মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দেন। পরিপ্রেক্ষিতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল, আগামী বছর থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পরীক্ষা নেয়া হবে না। তবে সিদ্ধান্ত বদলে চলতি বছর থেকেই পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়া হলো।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সুপারিশে প্রাথমিক পর্যায়ে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পরীক্ষা তুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে ইতোমধ্যে কাজ শুরু হয়েছে। শিক্ষাবিদসহ বিশেষ ব্যক্তিদের পরামর্শের ভিত্তিতে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
মন্ত্রী বলেন, তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পরীক্ষা তুলে দিলেও একটি বিশেষ মূল্যায়নের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পরবর্তী ক্লাসে পদোন্নতি দেয়া হবে। নতুন সিলেবাস তৈরিতে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডকে (এনসিটিবি) দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে এনসিটিবি একটি খসড়া তৈরি করেছে। পরবর্তীতে কর্মশালার আয়োজন করে সবার পরামর্শের ভিত্তিতে তা চূড়ান্ত করা হবে।
ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের উপর চাপ কমাতে বিভিন্ন মহল থেকে পঞ্চম শ্রেণির পাবলিক পরীক্ষা তুলে দেয়ার দাবি রয়েছে। সেখানে কিসের ভিত্তিতে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত বার্ষিক পরীক্ষা তুলে দেয়া হচ্ছে- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের উপর চাপ কমাতে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পরীক্ষা তুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। চতুর্থ শ্রেণি এবং সমাপনী ও ইবতেদায়ি পরীক্ষা আগের মতো আয়োজন করা হবে। এ বিষয়ে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
এদিকে লিখিত বক্তব্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জানান, ২০১৫ সাল থেকে পঞ্চম শ্রেণির প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার ফলের ওপর ভিত্তি করে সাড়ে ৮২ হাজার শিক্ষার্থীকে বৃত্তি দেয়া হচ্ছে। তার আলোকে এবারও সাড়ে ৮২ শিক্ষার্থীকে বৃত্তি দেয়া হচ্ছে। এর মধ্যে মেধা কোটায় (ট্যালেন্টপুল) বৃত্তি পাবে ৩৩ হাজার শিক্ষার্থী। সাধারণ কোটায় বৃত্তি পাবে সাড়ে ৪৯ হাজার। মেধা কোটায় বৃত্তিপ্রাপ্তরা ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত প্রতি মাসে ৩০০ টাকা এবং আর সাধারণ কোটায় ২২৫ টাকা করে বৃত্তির অর্থ পাবে।
তিনি বলেন, ঝরেপড়া রোধ, শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি বৃদ্ধি ও সুষম মেধা বিকাশের লক্ষ্যে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে উপজেলাভিত্তিক বৃত্তি দেয়া হয়। ফলে সব শিক্ষার্থী বৃত্তি পাওয়ার প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারে ও শিক্ষার মান বৃদ্ধি পায়।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব আকরাম আল হোসেন বলেন, তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পরীক্ষা তুলে দেয়া হলেও মূল্যায়ন প্রক্রিয়া থাকবে। নিচের ক্লাস থেকে ওপরের ক্লাসে উত্তীর্ণ করতে এ প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে। আর চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে পরীক্ষা নেয়া হবে।
সচিব আরো বলেন, সারাদেশে কোচিংগুলোর বিরুদ্ধে অভিযান চলছে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
সুত্র:সকালের সময়
Leave a Reply