বৃহস্পতিবার, ২২ এপ্রিল ২০২১, ০৮:৩৭ অপরাহ্ন
ডেক্স:আবিদাসুলতানা
সহকারী ইন্সপেক্টর জেনারেল
বাংলাদেশ পুলিশ হেডকোয়ার্টাস
আমি একজন নারী কর্মকর্তা হিসেবে নিজের অবস্থানকে সম্মান ও গর্ব অনুভব করি। পুলিশ সার্ভিসে আগমনটা আমার একান্ত ইচ্ছা ছিল এবং বিসিএস প্রথম পছন্দে ছিল পুলিশ ক্যাডার। ”পুলিশের চাকরির প্রতিটি কাজকে আমি আনন্দ নিয়ে সম্পন্নকরার চেষ্টা করেছি এবং এখনো করছি।”
১৯৭৪ সালে মাত্র ১৪ জন নারী পুলিশ সদস্য নিয়ে যাত্রা শুরু হয় বর্তমান ২০১৯ সাল পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়ে প্রায় ৭.৫৫ % নারী পুলিশ সদস্য বৃদ্ধি পেয়েছে যার সংখ্যা ১৩৩২৯ জন। বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় অন্যান্য ক্ষেত্রে যা হয়েছে সেই দিক থেকে এটি কিন্তু ব্যতিক্রম নয়। তবে অন্যান্য ক্ষেত্র থেকে নারী পুলিশের কাজ করাটা অনেকটা চ্যালেঞ্জিং বর্তমানে যে ধারা অব্যাহত আছে তাতে আমি ভীষণ আশাবাদী যে নারীরা আরো বেশি কাঙ্খিত পর্যায়ে আসতে সক্ষম হব।
একটা দেশের উন্নয়নের জন্য পুরুষের পাশাপাশি নারীকে অবশ্যই গুরুত্ব দিতে হবে। নারী -পুরুষের সমতা উন্নয়নের জন্য পূর্ব শর্ত। আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে যথেষ্ট সচেতন। সামাজিকভাবে দীর্ঘদিন ধরে আমাদের সমাজে যে পিতৃতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থার রয়েছে তারমধ্যে দিয়ে আরও সচেতন হয়ে নারীরা সকল ক্ষেত্রে এগিয়ে গেলে আমাদের নারী সমাজ তথা দেশে আরা বেশি উন্নতি হবে। আন্তর্জাতিক সংস্থায় নারী পুলিশের ভূমিকা সম্পর্কে বলা যায় ১৯৮৯ সাল থেকে জাতিসংঘের শান্তি মিশনে পুরুষের পাশাপাশি বাংলাদেশের নারী পুলিশ অংশগ্রহণ করে আসছে। জাতিসংঘের মহাসচিব ও অন্যান্য কর্মকর্তারা বাংলাদেশ নারী পুলিশের জাতিসংঘ মিশনের কার্যক্রম কে প্রশংসা করেছেন। অর্থাৎ আমরা পেশাদারিত্ব দেখাতে সক্ষম হয়েছি। সকলে মিলে নারীর এই কর্মক্ষমতাকে যদি আমরা মর্যাদা দিয়ে যেতে পারি তাহলে আমরা আরও পেশাদায়িত্বের সাথে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে সক্ষম হব।
আপনারা জানেন বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধ আমাদের শ্রেষ্ঠ অর্জন। মহান মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশ পুলিশ মহান আত্মত্যাগের যে অবদান সেটাকে তুলে ধরার জন্য বাংলাদেশ পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে খুবই গর্ব অনুভব করি কারন এরকম একটা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আমি প্রথম থেকেই যুক্ত ছিলাম বলে।পাশাপাশি নতুন প্রজন্মের কাছে আমাদের মুক্তিযুদ্ধে পুলিশের মহান আত্মত্যাগ কে তুলে ধরতে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর নিয়ে কাজ করার সময় লেখার মানসিকতা আমার ভিতরে নাড়া দেয়। আর সেখান থেকেই আমি লেখা শুরু করি `শহিদ পুলিশের রক্তের ঋণ` । বইটির মধ্যে তুলে ধরা হয়েছে, একাত্তর সালে তৎকালীন সময়ে পুলিশের প্রায় ৩৪ হাজার জনবলের মধ্যে ১৪ হাজার পুলিশ সদস্য পাকিস্তান সরকারের আনুগত্য অস্বীকার করে বিভিন্নভাবে মহান মুক্তিযুদ্ধের সাথে যুক্ত হন। একজন ডিআইজি চারজন পুলিশ সুপারসহ বিভিন্ন পদবির এগারোশ`র অধিক পুলিশ সদস্য শহীদ হন আহত ও পঙ্গুত্ব বরণ করেন অগণিত। জীবন বাজি রেখে যারা এদেশের স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন সেইসব বীর যোদ্ধাদের স্মৃতিকথা নিয়ে `শহীদ পুলিশের রক্তের ঋণ` শীর্ষক এই গ্রন্হ। আমি খুবই আশাবাদী বাংলাদেশ যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে বিশেষ করে আমাদের মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশ পুলিশের মাননীয় আই জি পি`র নেতৃত্বে বাংলাদেশ পুলিশ আরো এগিয়ে যাবে, বাংলাদেশ সমৃদ্ধির দিকে যাচ্ছে এবং বাংলাদেশ একটি নিরাপদ ও সমৃদ্ধশীল রাষ্ট্র হিসেবে পৃথিবীর বুকে প্রতিষ্ঠিত হবে এই প্রত্যাশ সব সময়।
সুত্র:সকালের সময়
Leave a Reply