শনিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২১, ০৯:১৭ পূর্বাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার: যশোরের অভয়নগরে আল আরাফা ঋণদান সমবায় সমিতির ফিল্ড অফিসার ইকবাল জাহিদকে চাঁদাদাবিতে অপহরণ ঘটনার মামলার দুই আসামি আদালতে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দিয়েছে। মঙ্গলবার জবানবন্দি গ্রহণ শেষে ওই দুইজনসহ মোট ৬জনকে জেলহাজতে প্রেরণের জন্য আদেশ দিয়েছেন যশোরের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সম্পা বসু।
জবানবন্দি দেয়া আসামিরা হচ্ছে অভয়নগরের বুইকারা এলাকার মুজিবর হাওলাদারের ছেলে রবিউল ইসলাম ও পাঁচ কবর এলাকার মৃত আব্দুল গণি সরদারের ছেলে আব্দুল মালেক।
রবিউল ও মালেক জানিয়েছে, ১ নভেম্বর যশোর ফলপট্টিতে রুবেল হাসান বাবুর সাথে তাদের দুইজনের দেখা হয়। এ সময় রুবেল তাদের নিয়ে বিআরএসি নামক একটি এনজিও অফিসে যায়। কিন্তু অফিসের কর্মকর্তা জানায়, জাহিদ নামের তাদের এক ফিল্ড অফিসারকে টাকার জন্য কারা যেন আটকে রেখেছে। এসময় ওই কর্মকর্তা রুবেল হাসানকে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা দেন। এরপর রুবেল, শাকিল, আকাশ, ইব্রাহিম, রবিউল ও মালেক মাইক্রোবাসে ঘটনাস্থলে যায়। সেখানে গিয়ে টাকা দিয়ে এনজিও কর্মকর্তা জাহিদকে ছাড়িয়ে নিয়ে আসি। জাহিদকে ছাড়ানোর জন্য মাইক্রোবাসের মধ্যেই রুবেল কর্মকর্তা জাহিদের কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করে। এসময় জাহিদ টাকা দিতে অস্বীকার করে। এরপর তাকে মারপিট করা হয়। পরে তার স্ত্রীকে ফোন দিয়ে টাকা আনতে বলা হয়। রুবেল ও তার লোকজনকে টাকা না দেয়ায় জাহিদকে আরও মারপিট ও শাকিলের বাড়িতে নিয়ে আটকে রাখা হয়। ১ নভেম্বর গভীর রাতে শাকিল ফোন দিয়ে রবিউলকে হাসপাতাল মোড়ে পুলিশ আছে কিনা দেখতে বলে। হাসপাতাল মোড়ে গেলে পুলিশ রবিউলকে আটক ও তার স্বীকারোক্তিতে জাহিদকে উদ্ধার করে।
এরপর তাদের স্বীকারোক্তিতে বাকি চারজনকে আটক করা হয়। এ ঘটনার সাথে জড়িত আটক ৬ জনসহ আরও কয়েকজন জড়িত বলে জানিয়েছে তারা।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, আল-আরাফা ঋণদান সমবায় সমিতির ফিল অফিসার ইকবাল জাহিদ অভয়নগরের দায়িত্বে আছেন। অভয়নগর উপজেলার ইছামতি গ্রামের ১০ সদস্যের কাছে ৭৬ হাজার টাকা নিয়ে বিবাদ হয়। ওই বিবাদ মিমাংসার জন্য ১ নভেম্বর ইছামতি গ্রামের কনার বাড়িতে যান জাহিদ। এসময় কনা ও তার ভাই স্থানীয় লোকজন দিয়ে তাকে আটকে রেখে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা দাবি করে। বিষয়টি ক্যাশিয়ারকে জানানো হয়। সন্ধ্যায় আসামিরা এসে তাকে একটি মাইক্রোগাড়িতে তুলে নেয়। তার ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি আকাশ ও মালেক চালিয়ে আসে। পথিমধ্যে আসামিরা তার কাছে মুক্তিপণ দাবি করে মারপিট ও হত্যার হুমকি দেয়। বিষয়টি জাহিদ তার স্ত্রীকে জানায়। এরপর ভয়নগর থানা পুলিশকে জানালে আসামিদের আটক এবং জাহিদকে উদ্ধার করা হয়।
এব্যাপারে জাহিদ বাদী হয়ে ৯ জনের নামউল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরো ২/৩ জনের বিরুদ্ধে অভয়নগর থানায় মামলা করেন। তদন্ত কর্মকর্তা আটক ৬ জনকে গতকাল মঙ্গলবার আদালতে সোপর্দ করেন। এদের মধ্যে রবিউল ইসলাম ও আব্দুল মাকেল আদালতে ওই স্বীকারোক্তি জবানবন্দি দিয়েছে।
Leave a Reply