শুক্রবার, ৩১ মার্চ ২০২৩, ০৪:৩৩ অপরাহ্ন
জয় ডেক্স: ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) নবগঠিত পরিচালনা পর্ষদ গণমাধ্যমের সাথে মতবিনিময়ের মাধ্যমে চলতি বছরের বিস্তারিত কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরেছে। গতকাল বুধবার ডিসিসিআই অডিটোরিয়ামে এক সংবাদ সম্মেলনে বার্ষিক কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরার পাশাপাশি দেশের ব্যবসায়িক খাতের বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেন ডিসিসিআই সভাপতি ওসামা তাসীর।
এসময় তিনি বলেন, বিনিয়োগ ও ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি করার জন্য ডিসিসিআই অগ্রাধিকারযোগ্য বিষয় নিয়ে নিয়মিত আলোচনা করে। ডিসিসিআই মনে করেÑ বছরব্যাপী ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিতকরণে অগ্রাধিকারযোগ্য বিষয়সমূহ নির্ণয়ে সরকারি-বেসরকারি সকল পক্ষের অংশীদারিত্ব জরুরী। তাই আমরা আজ ডিসিসিআইয়ের বছরব্যাপী কর্মপরিকল্পনা গণমাধ্যম কর্মীদের সামনে উপস্থাপন করছি।
সংগঠনের অবস্থান থেকে বাংলাদেশের চলমান অর্থনৈতিক ধারাকে লক্ষ্য করে ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রয়েছে। এই গতিশীলতা অব্যাহত রাখতে এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রাসমূহ অর্জনে বেসরকারি খাতের উন্নয়নের জন্য অর্থনীতির কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন। বাংলাদেশের জিডিপি বর্তমানে ২৭৪ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে। আমাদের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৭.৮৬%, রপ্তানী আয় ৪১.০১ বিলিয়ন ডলার, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩২.০২ বিলিয়ন ডলার এবং নিয়ন্ত্রিত মূল্যস্ফীতি সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতার পরিচয় বহন করে।
ব্যবসার পরিবেশ উন্নয়নে ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, ডিসিসিআই ব্যবসার পরিবেশ উন্নয়ন সম্পর্কিত একটি পজিশন পেপার প্রকাশ করবে। সেখানে Doing Business Index সূচকে যে দেশগুলো দ্রুত উন্নতি করেছে তাদের সংস্কার অভিজ্ঞতার আলোকে আমরা সরকারের কাছে সুপারিশ পেশ করব। BIDA’র নেতৃত্বে ওয়ান স্টপ সার্ভিস দ্রুত বাস্তবায়নের বিষয়টি আমরা নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করছি। এ ব্যাপারে আমরা সরকারের কাছ থেকে সার্বিক সহায়তা আশা করি।
অবকাঠামোখাতে দীর্ঘমেয়াদী অর্থায়ন নিশ্চিত করার জন্য বাংলাদেশে বন্ড মার্কেট চালু করা দরকার। বাংলাদেশে বন্ড মার্কেটের সম্ভাবনা বিষয়ে আমরা স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সহযোগিতায় আগামী এপ্রিল ২০১৯ এ দিনব্যাপী একটি সম্মেলনের আয়োজন করব। এর মধ্য দিয়ে বন্ড মার্কেট উন্নয়নে সুপারিশ ও সহায়ক নীতিমালা প্রস্তাব করা হবে। এ প্রেক্ষিতে আমরা অবকাঠামো প্রকল্প তত্ত্বাবধানের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে ‘National Infrastructure Development and Monitoring Advisory Authority (NIDMAA)’ নামের উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন কর্তৃপক্ষ গঠন করার প্রস্তাব রেখেছি যেখানে অবকাঠামো উন্নয়নে সরকারি ও বেসরকারিখাতের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা হবে।
ডিসিসিআই Sustainability of RMG Sector of Bangladesh in Export Market শিরোনামের একটি কেস স্টাডি পরিচালনা করার উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানান তিনি। গার্মেন্টস শিল্প খাতের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বৃদ্ধিতে এই গবেষণার ফলাফল এ খাতের সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের জানানো হবে। এ প্রসঙ্গে তিনি সরকারের প্রতি ডিসিসিআই’র প্রত্যাশা জানিয়ে বলেন, ‘গার্মেন্টস শিল্পখাতের কর্মপরিবেশ ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণের জন্য সমন্বিত Remediation Coordination Cell (RCC) গঠন করা হয়েছে। আমরা আশা করি-RCC একটি শিল্প সুরক্ষা ইউনিট হিসেবে গার্মেন্টস শিল্পকারখানার কর্মপরিবেশ উন্নয়নে ভূমিকা রেখে রপ্তানী বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।
আমরা কারখানার কর্মপরিবেশ উন্নয়নে কমপ্লায়েন্স সংকান্ত ব্যয় ও পণ্যের Value addition কে অনুপ্রাণিত করার লক্ষ্যে আর্থিক প্রণোদনা প্রদান করার প্রস্তাব করছি। এ ধরনের প্রণোদনা মালিকদের কারখানার কর্মপরিবেশ উন্নয়নে ও রপ্তানি পণ্যের বহুমুখীকরণে উৎসাহিত করবে।’
চতুর্থ শিল্প বিপ্লব প্রসঙ্গে ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, ‘বাংলাদেশের চেম্বারগুলোর মধ্যে ঢাকা চেম্বারই প্রথম ৪র্থ শিল্প বিপ্লব সংকান্ত বিষয়গুলো নিয়ে কাজ শুরু করেছে।
ডিসিসিআই ২০১৮ সালে BD4IR এর সঙ্গে যৌথভাবে 4th Industrial Revolution: Transition to Transformation – Key Challenges & Opportunities for Bangladesh শীর্ষক একটি আলোচনা সভার আয়োজন করে। যেখানে সরকারি ও বেসরকারি খাতের প্রতিনিধি এবং বিশেষজ্ঞগণ উপস্থিত ছিলেন এবং মূল্যবান পর্যবেক্ষণ ও সুপারিশ উপস্থাপন করেছেন।
ডিসিসিআই ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি ওয়াকার আহমেদ চৌধুরী, সহ-সভাপতি ইমরান আহমেদ, পরিচালক আশরাফ আহমেদ, আলহাজ্ব দ্বীন মোহাম্মদ, এনামুল হক পাটোয়ারী, হোসেন এ সিকদার, কে এম এন মঞ্জুরুল হক, ইঞ্জিঃ মোঃ আল আমিন, মোঃ রাশেদুল করিম মুন্না এবং এস এম জিল্লুর রহমান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
সুত্র:সকালের সময়
Leave a Reply