বৃহস্পতিবার, ৩০ মার্চ ২০২৩, ০২:৩৫ পূর্বাহ্ন
জয় ডেক্স: জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনের তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। একই সঙ্গে উপজেলা পরিষদের পাঁচ ধাপের ভোটের দিন ঘোষণার পাশাপাশি প্রথম ধাপের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। প্রথম ধাপে ৮৭ উপজেলায় ভোট নেওয়া হবে ১০ মার্চ। এ ছাড়া দ্বিতীয় ধাপে ১৮ মার্চ, তৃতীয় ধাপে ২৪ মার্চ, চতুর্থ ধাপে ৩১ মার্চ ও পঞ্চম ধাপে ১৮ জুন ভোট নেওয়া হবে। বর্তমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানদের প্রার্থী হতে পদ ছাড়তে হবে।
গতকাল রোববার নির্বাচন কমিশনের সভা শেষে ইসি কার্যালয়ের সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ এসব তথ্য জানান। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদার সভাপতিত্বে কমিশনের বৈঠকে অন্য চার কমিশনারসহ ইসি কার্যালয়ের সংশ্নিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ইসি সচিব জানান, প্রথম ধাপে দেশের চার বিভাগের ১২ জেলার ৮৭ উপজেলায় ১০ মার্চ ভোট নেওয়া হবে। প্রথম ধাপের মনোনয়নপত্র জমার শেষ দিন ১১ ফেব্রুয়ারি, বাছাই ১২ ফেব্রুয়ারি, মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন ১৯ ফেব্রুয়ারি। ২০ ফেব্রুয়ারি প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে। আইন অনুযায়ী এই নির্বাচনের তিনটি পদ চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও সংরক্ষিত নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের প্রতীক বরাদ্দ দেওয়ার সুযোগ রয়েছে। তবে ৩০ ডিসেম্বরের সংসদ নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুলে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের অধিকাংশই এই নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে। অন্যদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক করার লক্ষ্যে শুধু চেয়ারম্যান পদে দলীয় প্রতীক বরাদ্দের কথা জানানো হয়েছে। ভাইস চেয়ারম্যানের দুটি পদে তারা কোনো প্রার্থীকে প্রতীক বরাদ্দ দিচ্ছে না। সে ক্ষেত্রে ভাইস চেয়ারম্যান পদ দুটিতে আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের জন্য সংরক্ষিত প্রতীকে অংশ নিতে হবে।
ইসি সচিব জানান, প্রথম ধাপে রংপুর বিভাগের পঞ্চগড়, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী ও লালমনিরহাট জেলার সবক’টি উপজেলা, ময়মনসিংহ বিভাগের জামালপুরের সবক’টি উপজেলা ও নেত্রকোনা জেলার আটপাড়া ছাড়া সবক’টি উপজেলা, সিলেট বিভাগের জগন্নাথপুর ছাড়া সুনামগঞ্জের সবক’টি উপজেলা, নবগঠিত শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা বাদে হবিগঞ্জের সবক’টি উপজেলায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। শায়েস্তাগঞ্জের ভোট হবে পঞ্চম ধাপে। সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলা পরিষদের মেয়াদ আরও দুই বছর বাকি রয়েছে বলে জানান ইসি সচিব। তিনি আরও জানান, প্রথম ধাপে রাজশাহী বিভাগের সিরাজগঞ্জ জেলার কামারখন্দ উপজেলা ছাড়া সবক’টি উপজেলা, নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলা ছাড়া সবক’টি উপজেলা এবং জয়পুরহাট ও রাজশাহীর সবক’টি উপজেলায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
ইসি সচিব বলেন, অন্য চার ধাপের কোন ধাপে কোন উপজেলার ভোট হবে তা পরে জানানো হবে। এক প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, যে কোনো স্থানীয় সরকার কর্তৃপক্ষের কেউ নির্বাচনে অংশ নিতে চাইলে তাকে পদ ছাড়তে হবে।
ইসির অতিরিক্ত সচিব মোখলেছুর রহমান বলেন, উপজেলা আইনের ৮(২) ধারা মতে, যদি কেউ জাতীয় সংসদের সদস্য বা অন্য কোনো স্থানীয় কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান বা সদস্য হন বা থাকেন তাহলে তিনি চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান তিনটি পদের কোনোটিতেই প্রার্থী হওয়ার যোগ্য হবেন না।
সর্বশেষ ২০১৪ সালের মার্চ-মে মাসে ছয় ধাপে উপজেলা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। আইনে মেয়াদ শেষের আগের ১৮০ দিনের মধ্যে ভোট আয়োজনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। ১৯৮৫ সালে উপজেলা পরিষদ চালু হওয়ার পর ১৯৯০ ও ২০০৯ সালে একদিনেই ভোট হয়েছিল।
সংরক্ষিত নারী আসনে ভোট ৪ মার্চ : একাদশ সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনের নির্বাচনের মনোনয়ন জমার শেষ দিন ১১ ফেব্রুয়ারি, বাছাই ১২ ফেব্রুয়ারি, মনোনয়ন প্রত্যাহার করা যাবে ১৬ ফেব্রুয়ারি। ভোটের দিন ধার্য করা হয়েছে ৪ মার্চ। সাধারণত ভোটারের সমর্থনেই সংরক্ষিত পদের প্রার্থী নির্বাচিত হওয়ায় ভোটাভুটি হয় না। তাই ভোট না হলে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের দিন অর্থাৎ ১৬ ফেব্রুয়ারি নির্ধারণ হবে সংরক্ষিত আসনে কারা এমপি নির্বাচিত হচ্ছেন। একাদশ সংসদ নির্বাচনে বিএনপির বিজয়ীরা শপথ না নেওয়ায় ৪৯টি নারী আসনে মনোনয়নপত্র জমা নেওয়া হবে।
বিদ্যমান আইন অনুযায়ী, সরাসরি ভোটে জয়ী দলগুলোর আসন সংখ্যার অনুপাতে নারী আসন বণ্টন করা হয়। আনুপাতিক হিসাবে এবার আওয়ামী লীগ ৪৩টি, জাতীয় পার্টি চারটি, বিএনপি একটি, ওয়ার্কার্স পার্টি একটি ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা একটি আসনে প্রার্থী মনোনয়ন দিতে পারবেন। ইসি সচিব বলেন, বিএনপির বিজয়ীরা শপথ না নেওয়া পর্যন্ত একটি আসন স্থগিত রাখা হবে। তারা শপথ নিলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। সুত্র: দৈনিক সমকাল
Leave a Reply