সোমবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৭:৪১ অপরাহ্ন
জয় ডেক্স: আসল নাম বাবু হেলেন। চলচ্চিত্রে যাকে সবাই সূচরিতা নামেই চিনেন। ১৯৬৯ সালে শিশু শিল্পী হিসেবে এ অঙ্গনে যাত্রা তার। চলছে এখনও। তবে এখনকার চলাটা নিভু নিভু প্রদীপের ন্যায়। নিজেকে নিয়ে নতুন কোন স্বপ্ন দেখছেন না আর।তবে চলচ্চিত্র ইন্ডাষ্ট্রি নিয়ে চিন্তা করেন বেশ রকম। চিন্তার ওই সময়টাতে নিজেদের সোনালী সময়ে হারিয়ে যান। স্মৃতি হাতরেই এখন বেঁচে থাকা। নিজের স্বর্ণালি সময়টা অনুভব করেই চেষ্টা করছেন ভালো থাকার।
গত ৩০ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হলো বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির বার্ষিক বনভোজন। বেশ আনন্দ আর উল্লাস নিয়ে চলচ্চিত্রের শিল্পীরা দিনটি পালন করার চেষ্টা করেছেন।স্থান গাজীপুর কালিগঞ্জে মেঘবাড়ি রিসোর্ট হওয়ায় সেখানে যেন তারাদের হাটই বসেছিলো।
সবাই যখন উল্লাস আর আনন্দে ব্যস্ত ঠিক তখন দেখা গেলো রিসোর্টের সুইমিং পুলের পাশে একা একা হাটছেন চাষী নজরুল ইসলামের ‘হাঙর নদী গ্রেনেড’ ছবিতে অভিনয় করে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাওয়া অভিনেত্রী সুচরিতা।
সূচরিতা
সূচরিতা শিশুশিল্পী হিসেবে অভিনয় শুরু করলেও নায়িকা হিসেবে প্রথম অভিনয় করেনে ‘স্বীকৃতি’ নামের একটি ছবিতে । সেটা ১৯৭২ সালে। তবে ১৯৭৭ সালে আবদুল লতিফ বাচ্চু পরিচালিত ‘যাদুর বাঁশী’ ছবিটি তাকে জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌছে দেয়।
সুইমিং পুলের কাছে গিয়ে কথা হয় তার সঙ্গে। কুশল জানতেই একগাল হেসে জানান, এই বয়সে যেমন থাকার কথা তেমনই! কথায় কিছুটা আক্ষেপের সুর যেন ভেসে এলো। একা একা ঘুরছেন? প্রশ্ন রাখতেই ‘না সঙ্গে মেয়ে আছে। ওরই তো এখন সব আনন্দ। সুচরিতার সহজ উত্তর।
ওইদিকে বেশ আনন্দ উল্লাস হচ্ছে। শিল্পীরা নাচ, গান করছেন। ওদিকে না দিয়ে এখানে ঘুরছেন? কথা বলতে বলতে এমন প্রশ্নে করতেই সুচরিতার উত্তর। ওদিকে অনেক গ্যাদারিং এই বয়সে এসব ভালো লাগেনা। তাই এদিকে ঘুরছি। আর শিল্পীদের পিকনিকে এতো এতো মানুষ কই থেকে এলো বুঝতে পারছিনা। এমন হলে তো আর আসা সম্ভব হবে না। ভারী মেকাপ করে অনেক মেয়েদেরও দেখলাম। সবাই পরিচয় দিচ্ছে তারা নায়িকা। কিন্তু কয়েকজনকে ছাড়া কাউকেই তো চিনিনা।’
এতো এতো নায়িকা পিকপিনিকে এসে দেখলাম। কিন্তু তাদের কোন ছবিতে তো দেখিনি। চলচ্চিত্রে তো আমরা জানি শিল্পী সংকট। কই সেটা? এখানে কত শিল্পীকেই দেখছি! যোগ করে বলেন সূচরিতা।
চলচ্চিত্রে নায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন, ওয়াসিম এবং উজ্জ্বলের সঙ্গে বেশ ভালো রসায়ন ছিলো সূচরিতার। অভিনয়ের পাশাপাশি চমৎকার শারীরিক অবয়ব এবং ফটোজেনিক চেহারা তাকে এনে দেয় দর্শকপ্রিয়তা। তবে ক্যারিয়ারের জনপ্রিয় মূহুর্তে হুট করেই চিত্র নায়ক জসিমকে বিয়ে করেন তিনি। বেশি দিন টেকেনি সে সংসার। বিয়ের পর চলচ্চিত্রে কিছুটা গ্যাপ দিলেও আবার ফিরেন।
দীর্ঘদিন ধরেই মায়ের চরিত্রে অভিনয় করে আসছেন সূচরিতা। কিন্তু এখন অভিনয়ে তেমন দেখা যায়না তাকে। কারণ কী? জানতে চাইলে এ বর্ষিয়ান এ অভিনেত্রী বলেন,‘চলচ্চিত্র নির্মাণ হচ্ছে কই?নতুন চলচ্চিত্র নির্মাণ হলেই তো আমাদের দেখতে পাবেন। এখন তো শাকিব খানের হাতেও তেমন ছবি নেই। তাহলে বুঝুন চলচ্চিত্র নির্মাণ কোথায় এসে দাঁড়িয়েছে। তাই এইসব আনন্দ আয়োজন এখন খুব একটা আনন্দ দেয়না। এফডিসি সরগরম থাকবে নতুন নতুন ছবির শুটিংয়ে। তবেই তো শিল্পীরা আনন্দে থাকবেন। এসব আনন্দ আয়োজনের চেয়ে ছবি নির্মাণের দিকে মনোযোগি হওয়া প্রযোজন। দরকার হলে চাঁদা তুলে আনন্দ আয়োজন নয়, সিনেমা নির্মাণ করা উচিত।’
আটদশন নারী যেভাবে বাসায় সময় কাটান সূচরিতাও এখন সেভাবে সময় কাটাচ্ছেন বলে জানান। সম্প্রতি এসেছেন উমরাহ হজ করে। আাগমীতে বড় হজ করতে যাবেন বলেও জানান তিনি। এ জন্য সবার কাছে দোয়াও চান বাংলা চলচ্চিত্রের এক সময়ের পর্দা কাপানো এ নায়িকা। সুত্র:দৈনিক সমকাল
Leave a Reply